চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি পরিচালনায় স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা

লেখক: নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে

চট্টগ্রাম: দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামকে আধুনিক ও কার্যকর করতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান DP World-কে যুক্ত করার পরিকল্পনা এখন জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। নীতিনির্ধারক মহল থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ এবং শ্রমিক সংগঠন—সবার নজর এখন এই সম্ভাব্য অংশীদারিত্বের দিকে।

DP World: অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তির সমন্বয়

বিশ্বব্যাপী ৭৮টিরও বেশি বন্দর পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান DP World-এর। আধুনিক যন্ত্রপাতি, স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি এবং দক্ষ জনবল দিয়ে তারা পণ্য খালাসে সময় ও খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনার সক্ষমতা রাখে। বিশ্লেষকদের মতে, এমন একটি অপারেটর চট্টগ্রাম বন্দরের দীর্ঘদিনের কর্মক্ষমতার সীমাবদ্ধতা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

বাণিজ্যে গতি, অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব

বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার খালাসে সময় লাগে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য বন্দরের তুলনায় বেশি। DP World-এর মতো প্রযুক্তিনির্ভর অপারেটর যুক্ত হলে এই সময় অর্ধেকে নেমে আসতে পারে, যা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে গতি এনে জাতীয় অর্থনীতিকে আরও চাঙ্গা করতে পারে।

অনিয়ম রোধে আন্তর্জাতিক মান

বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে একচেটিয়া অপারেটরের কর্তৃত্ব, অতিরিক্ত চার্জ, অদক্ষতা ও দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। বিশ্লেষকদের মতে, DP World-এর মতো স্বচ্ছতা-নির্ভর প্রতিষ্ঠানের আগমন এই অনিয়মগুলোকে হ্রাস করতে পারে এবং বন্দরের ব্যবস্থাপনাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে পারে।

শ্রমিকদের উদ্বেগ ও সমাধান প্রয়োজন

তবে সব কিছুই নির্বিঘ্ন নয়। বন্দরের কিছু শ্রমিক সংগঠন বিদেশি অপারেটরের নিয়োগ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তাদের মূল দাবি—স্থানীয় শ্রমিকদের চাকরি নিরাপত্তা এবং ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি শ্রমিকদের অংশগ্রহণ ও স্বার্থ রক্ষা নিশ্চিত করে চুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে এই অংশীদারিত্ব একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপে পরিণত হতে পারে।

DP World-এর আগমন চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতা বাড়াতে পারে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে তা যেন হয় স্বচ্ছ, যুক্তিসংগত ও জাতীয় স্বার্থরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে—এটাই এখন সময়ের দাবি।

📌 তথ্যসূত্র: বিশ্বব্যাংক, বন্দর কর্তৃপক্ষ, অর্থনীতিবিদ ও শ্রমিক সংগঠনের মন্তব্য।
📞 যোগাযোগ: সংবাদ ডেস্ক | [email protected]