চট্টগ্রাম: দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান DP World-কে যুক্ত করার পরিকল্পনা এখন নীতিনির্ধারণী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, DP World-এর মতো অভিজ্ঞ ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর অপারেটর যুক্ত হলে দেশের আমদানি-রপ্তানি খাতে গতি আসবে এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ আরও সহজ ও উন্নত হবে।
বন্দর উন্নয়নে DP World-এর সম্ভাব্য ভূমিকা
DP World বিশ্বব্যাপী ৭৮টির বেশি বন্দর পরিচালনার অভিজ্ঞতা নিয়ে চট্টগ্রামে আসতে চায়। তারা আধুনিক যন্ত্রপাতি, স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ও দক্ষ জনবল ব্যবহারের মাধ্যমে বন্দরের পণ্য খালাসে সময় ও খরচ কমাতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার খালাসে সময় লাগে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য বন্দরের চেয়ে বেশি। অথচ DP World পরিচালিত অনেক বন্দরে এই সময় অর্ধেকে নেমে আসে। এতে আমদানি-রপ্তানিকারকরা সময় ও অর্থে লাভবান হন।
স্থানীয় অনিয়মের বিপরীতে আন্তর্জাতিক মান
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের নির্দিষ্ট কিছু অপারেটর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে, যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অতিরিক্ত চার্জ, দুর্নীতি ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে একদিকে ব্যবসায়ী সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। DP World-এর মতো স্বচ্ছতা-নির্ভর প্রতিষ্ঠান এলে এসব অনিয়ম কমবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
শ্রমিক ও জনগণের উদ্বেগের সদুত্তর জরুরি
তবে বন্দরের কিছু শ্রমিক সংগঠন বিদেশি অপারেটরের নিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্রমিকদের সুরক্ষা ও স্থানীয় কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দিয়ে এই অংশীদারিত্ব বাস্তবায়ন করলে সকল পক্ষ উপকৃত হবে।
DP World-এর মতো বিশ্বমানের অপারেটরের আগমন চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এটি বাস্তবায়নে দরকার স্বচ্ছ পরিকল্পনা, শ্রমিক সুরক্ষা, এবং জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।