বর্তমান সমাজে দাম্পত্য কলহ, বিচ্ছেদ ও পারস্পরিক অবিশ্বাসের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে। এই প্রেক্ষাপটে ইসলামic আদর্শে গঠিত দাম্পত্য জীবন কীভাবে পরিবারে শান্তি, সৌহার্দ্য ও সম্মানের পরিবেশ তৈরি করে, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন দেশের খ্যাতনামা আলেম ও সমাজ গবেষকগণ।
চট্টগ্রামের একজন ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা ফারুকুল ইসলাম বলেন, “ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক শুধুমাত্র পারিবারিক চুক্তি নয়, এটি ইবাদতের অংশ। নবী করিম (সা.) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন কিভাবে সহানুভূতি, ধৈর্য ও ভালোবাসার মাধ্যমে একজন স্বামী ও স্ত্রী একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের মাঝে ভালোবাসা ও রহমত সৃষ্টি করা হয়েছে’ (সূরা রূম, আয়াত ২১)। এই আয়াত স্পষ্ট করে দেয়, দাম্পত্য জীবনের মূল ভিত্তি হলো ভালোবাসা, দয়া ও বোঝাপড়া।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ইসলামি শিক্ষা অনুযায়ী দাম্পত্য জীবন পরিচালনা করেন, তাদের মধ্যে বিচ্ছেদের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কম। গবেষকরা বলছেন, “ইসলাম স্বামীকে স্ত্রীকে সম্মান করতে এবং স্ত্রীকে স্বামীকে ভালোবাসা ও আনুগত্যের সঙ্গে সহযাত্রী হতে শেখায়। এই পারস্পরিক বোঝাপড়াই টেকসই সম্পর্কের মূল চাবিকাঠি।”
এছাড়া, হাদীসের আলোকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রোজ কিছু ভালো কথা বলা, একে অপরের কাজে সহযোগিতা করা এবং ছোটখাটো রাগ বা মনোমালিন্যে ক্ষমার মনোভাব রাখাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তরুণ প্রজন্মকে বিয়ের আগেই ইসলামি দাম্পত্য শিক্ষা দেওয়া হলে তারা একজন দায়িত্বশীল জীবনসঙ্গী হয়ে উঠতে পারে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন মসজিদ, ইসলামিক সেন্টার ও সামাজিক সংগঠন দাম্পত্য প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করছে।দাম্পত্য জীবন শুধু দুটি মানুষের বন্ধন নয়, এটি একটি সামাজিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব। ইসলামic আদর্শ মেনে চললে এই জীবন হয় মধুর, শান্তিপূর্ণ ও দৃষ্টান্তমূলক।