নিজস্ব প্রতিবেদক | গুলশান, ১৮ মে:
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বর্তমান সরকার এমনভাবে চলছে যেন তারা একটি নির্বাচিত সরকার। অথচ এটি একটি অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার, যার মূল দায়িত্ব ছিল একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।
রবিবার (১৮ মে) রাজধানীর গুলশানে হোটেল সারিনায় সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
‘ঐক্যমতের ভিত্তিতে’ কথাটাও যেন লোক দেখানো:
তিনি বলেন, সরকার বারবার বলছে সংস্কার এবং ঐক্যমতের ভিত্তিতে সবকিছু করবে, কিন্তু সেই ঐক্যমত কোথায় হচ্ছে, কার সঙ্গে হচ্ছে, সেটি প্রকাশ করা হচ্ছে না। এই ধরনের আচরণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী।
দেশ আছে অনিশ্চয়তায়, নির্বাচনহীনতা বাড়াচ্ছে অস্থিরতা:
আমীর খসরু আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে রয়েছে। সবাই মিলে স্বৈরাচার বিদায় করেছিল, কিন্তু গণতন্ত্রের পথচলা আজও শুরু হয়নি। নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ায় দেশ আরও অস্থিরতার দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
‘সরকার কেন করিডর-বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে?’
বিনিয়োগ সম্মেলন, করিডর ও বন্দর বিষয়ে সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, “এসব গুরুতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার কে দিয়েছে? এরা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি নয়।”
দক্ষিণ সিটির মেয়র ইস্যুতে আদালতের আদেশ উপেক্ষিত:
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইস্যুতে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়া এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের লোকদের প্রশাসনিক দায়িত্বে বসানোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।
নতুন সদস্য হলেও চাই সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা:
দলের সদস্য সংগ্রহ বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, “আমরা নতুন সদস্য নেব, তবে তাকে অবশ্যই সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। বাংলাদেশে স্থিতিশীল ও সহাবস্থানভিত্তিক রাজনীতি চায় বিএনপি।”
ভবিষ্যতের নির্বাচন হোক নিয়মিত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়:
তিনি বলেন, “নির্বাচন যেন একটি রুটিন প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা। সরকার যে জনআস্থা হারাচ্ছে, তা দেশের জন্য অশনি সংকেত।”
বন্দর ইস্যুতে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার দাবি:
বন্দরে বিদেশি অপারেটর আনার সিদ্ধান্ত জনগণের সমর্থন ছাড়া নেয়া অনৈতিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শেষ কথা:
আমীর খসরুর মতে, বর্তমান সরকার একটি নির্বাচিত সরকারের মতো আচরণ করছে, অথচ তারা কেবল একটি অস্থায়ী, নির্বাচনকালীন সরকার। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, জনগণের মতামত এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার আহ্বান জানান তিনি।