রাত্রিকালীন রূপচর্চায় নারকেল তেলের ব্যবহার অনেকেই করেন নিয়মিতভাবে। তবে এটি ক্ষতির কারণও হতে পারে—বিশেষ করে তৈলাক্ত এবং ব্রণপ্রবণ ত্বকের জন্য। নিচে নারকেল তেলের ক্ষতিকর দিকগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:
১. ছিদ্রমুখ বন্ধ হয়ে যাওয়া (Clogged Pores):
নারকেল তেল অত্যন্ত ঘন ও ফ্যাটসমৃদ্ধ। দীর্ঘ সময় মুখে থাকলে এটি ত্বকের ছিদ্রমুখ (pores) বন্ধ করে দেয়। এর ফলে ত্বকে জমে থাকা ধুলোময়লা ও তেল নিঃসরণের পথে বাধা সৃষ্টি হয়, যা ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস এর জন্ম দেয়।
২. ব্রণ ও ত্বকে র্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা:
তৈলাক্ত ও স্পর্শকাতর ত্বকের ক্ষেত্রে নারকেল তেল ব্যবহারে চুলকানি, র্যাশ, ফুসকুড়ি ও লালচে ভাব দেখা দিতে পারে। এতে ত্বকের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হয়, এবং ব্রণের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
৩. অ্যালার্জির ঝুঁকি:
অনেকের ত্বক নারকেল তেলে থাকা প্রাকৃতিক উপাদানের (যেমন লরিক অ্যাসিড) প্রতি সংবেদনশীল হয়। এতে ত্বক ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া কিংবা অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হতে পারে, বিশেষ করে রাতে ঘুমের সময় তেল দীর্ঘক্ষণ ত্বকে থাকার কারণে।
৪. তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ‘বিপজ্জনক’ ময়েশ্চারাইজার:
যেহেতু নারকেল তেল একটি কমেডোজেনিক (comedogenic) উপাদান (মানে ত্বকের ছিদ্রমুখ বন্ধ করে দেয়), তাই যাদের ত্বক ইতোমধ্যেই তৈলাক্ত—তাদের জন্য এটি নাইটক্রিম বা ফেস অয়েল হিসাবে ব্যবহার করা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
৫. হরমোনজনিত ব্রণের প্রকোপ বৃদ্ধি:
নারকেল তেলের অতি ব্যবহারে হরমোনজনিত ব্রণের প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যৌবনকালীন বা মাসিকচক্রজনিত হরমোন পরিবর্তনের সময় এটি সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
যদিও নারকেল তেল প্রাকৃতিক ও উপকারি উপাদান, তবে তা সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী নয়। বিশেষ করে যাদের তৈলাক্ত, স্পর্শকাতর বা ব্রণপ্রবণ ত্বক রয়েছে, তাদের রাতের রূপচর্চায় নারকেল তেল ব্যবহার না করাই নিরাপদ। কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহারের আগে patch test করা এবং প্রয়োজনে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।