জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে নয়: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

লেখক:
প্রকাশ: ১ দিন আগে

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী যে দাবি তুলেছেন— সংস্কার ও ন্যায়বিচারের আগে নির্বাচন নয়— তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা, জনগণের অধিকার ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য যৌক্তিক ও অপরিহার্য।

১. শহীদের রক্তের মর্যাদা রক্ষার প্রশ্ন

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কার আন্দোলনে অনেক মানুষ জীবন দিয়েছেন, অঙ্গহানি সহ্য করেছেন, মায়ের বুক খালি হয়েছে। যদি সেই ত্যাগের পরেও একই সংবিধান, একই ক্ষমতাকেন্দ্রিক ব্যবস্থা এবং একই স্বৈরতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অধীনে নির্বাচন হয়— তাহলে শহীদদের রক্তের মর্যাদা রক্ষা হবে না। তাই নির্বাচন হওয়ার আগে সেই সংস্কার বাস্তবায়ন জরুরি।

২. ন্যায়বিচার ছাড়া গণতন্ত্র অসম্পূর্ণ

সংস্কারের পাশাপাশি অতীতের অন্যায় ও রাষ্ট্রীয় দমন-নিপীড়নের বিচার হতে হবে। যারা মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করেছে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অপব্যবহার করেছে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। বিচারহীন নির্বাচন মানে অপরাধীদের পুরস্কৃত করা।

৩. একই সিস্টেমে নির্বাচন মানেই পুরনো সমস্যার পুনরাবৃত্তি

যে ফ্যাসিবাদী সংবিধান ও দুর্বল নির্বাচনী কাঠামো ক্ষমতাকে কেন্দ্রিভূত করে রাখে, সেটি পরিবর্তন না করলে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, জনগণ আবার একই সংকটে পড়বে। তাই প্রথমে ব্যবস্থা সংস্কার, পরে নির্বাচন— এটাই স্থায়ী সমাধান।

৪. রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার জরুরি

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন— ডিজিএফআইসহ রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দায়িত্ববোধ নিশ্চিত না করলে তারা আবারও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করবে। এই সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

৫. জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা

বিগত নির্বাচনী অভিজ্ঞতায় জনগণের একটি বড় অংশের আস্থা নষ্ট হয়েছে। এই আস্থা ফেরাতে হলে প্রথমে সংস্কার, বিচার ও দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যাতে মানুষ বিশ্বাস করে— এবার ভোট দিলে তার ফলাফল পরিবর্তন হবে না।


সারসংক্ষেপে, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বক্তব্যের মূল শক্তি হলো—

“ত্যাগের মর্যাদা, ন্যায়বিচার ও রাজনৈতিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।”
এটি শুধু রাজনৈতিক স্লোগান নয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদি গণতান্ত্রিক নিরাপত্তার নীতি।